“তুই তো ওকে বলতে পারিস? এতো লজ্জা পেলে চলে!” কথাটা রবিন বলল ডেভিডকে৷
[এটি একটি কাল্পনিক গল্প। বাস্তবে এর সাথে কোনো মিলামিল নেই। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম হারাম এবং আমরা প্রেমকে সমর্থন করিনা।]
ডেভিড ছোটবেলা থেকেই লজ্জা পায় সবকিছু। মেয়ে মানুষের সাথে কথা ও বলতে পারে না ঠিকমতো৷
ডেভিড বলল, “বলব একদিন।”
“কিন্তু তার আগেই যদি ওর বিয়ে হয়ে যায়?”
এবার একটা ভাবলে ডেভিড। সত্যিই তো সাদিয়ার যদি আগেই বিয়ে হয়ে যায়! তাহলে তো কোনোদিন সে তার মনের কথা বলতে পারবে না।
সে বলল, “আচ্ছা, আজকে আমি ওকে বলব।”
একটা দোকান থেকে কেনাকাটা করছিল সাদিয়া। সাদিয়া আর ডেভিড ছোটবেলা থেকে এক সাথেই পড়তো। কিন্তু কখনো বলা হয় নি যে সে সাদিয়াকে ভালোবাসে।
সে সাদিয়ার কাছে গেল। বলল, “কি করছো সাদিয়া?”
সাদিয়া বলল, “এইতো বাজার করছি। তুমিও কি বাজার করবে?”
ডেভিড বলল, “না, মানে, ইয়ে। বাজার করব না। তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।”
সাদিয়া বলল, “কি কথা?”
ডেভিড বলল, “আমি তোমাকে ইয়ে মানে ভালোবাসি। না, ওটা আমি বলতে চাই নি।”
“কিন্তু তুমি তো বলে ফেলেছো।” এই বলে সাদিয়া হাসতে লাগলো। আর ডেভিড লজ্জা পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে গেল।
পরেরদিন সাদিয়া ডেভিডের কাছে এসে বলল, “আমিও তোমাকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি এতোদিন তোমার মুখ থেকে শোনার জন্য কথাটা বলি নি।”
তারপর থেকে ওদের প্রেম চলতে লাগলো৷ প্রতিদিন ওরা দেখা করতো৷ যত দিন যায় ওদের প্রেম আরো গভীর হয়। (ইসলামে প্রেম হারাম)
একদিন এক ডাইনি ডেভিড কে দেখে তার প্রেমে পড়ে যায়। নাম তার ইসাবেলা। ইসাবেলা ওকে তার মনের কথা জানায়। কিন্তু ডেভিড রাজি হয় না। কারণ ডেভিড সাদিয়াকে ভালোবাসে।
ডাইনিটা ওকে অভিশাপ দিল। আজকে রাতের মধ্যেই ডেভিড একটা নেকড়েতে পরিণত হবে। ডেভিড শুনে হাসলো৷ মেয়েটা পাগল হবে হয়তো। কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে সে বাসায় গিয়ে ভাবতে লাগলো। আগামীকাল সে সাদিয়ার বাবার কাছে যাবে৷ সে তার বাবাকে বলবে তার মেয়েকে বিয়ে করতে চায় ডেভিড। সাদিয়াও বলেছে কালকে সকালে তার জন্য অপেক্ষা করবে সে।
এই ভাবতে ভাবতে সে ঘুমিয়ে পড়লো। সকালে উঠে আয়নার সামনে দাড়িয়ে সে হতবাক। সে একটা কালো নেকড়েতে পরিণত হয়েছে। সে দৌড়ে গেল ইসাবেলার কাছে। কিন্তু সে ওখানে এখন নেই। সাদিয়ার বাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করলো। কিন্তু সবাই ওকে দেখে ভয়ে পালাচ্ছে। সে একটা ঝোপের পাশ থেকে সাদিয়াকে দেখলো। মেয়েটা এখনো অপেক্ষা করছে। কিন্তু এই অবস্থায় তার সামনে যাওয়া যাবে না।
সে ইসাবেলা যেদিকে থাকে সেদিকে হাঁটতে শুরু করলো। অনেক জঙ্গল পেরিয়ে, অনেক সাগর পেরিয়ে একটা দ্বীপে এসে পৌছালো সে৷
সে দেখলো একটা ছেলেকে চারটা বাঘ চারদিকে থেকে ধেয়ে আসছে ছেলেটাকে খেতে। ডেভিড এক দৌড়ে ছেলেটার সামনে গিয়ে হুঙ্কার দিল। বাঘগুলো ওকে দেখে ভয়ে পালালো।
সেই মুহূর্তে ইসাবেলা ওর ভাইয়ের কাছে এলো। ছেলেটা বলল, “ঐ নেকড়েটা আমাকে বাঁচিয়েছে।”
ইসাবেলা ডেভিডের দিকে তাকালো। সে বুঝে গেল। তারপর ডেভিড কে বলল, “ডেভিড, আমি সত্যিই খুব লজ্জিত। আমাকে ক্ষমা করে দাও। আর তোমাকে এক্ষুনি মানুষে রূপান্তরিত করছি। এই বলে সে ব্যাগ থেকে কয়েক ফোটা পানি ডেভিডের দিকে ছুড়ে মারলো।”
ঠিক তখনি ডেভিড আবার নেকড়ে থেকে মানুষে পরিণত হলো। ইসাবেলা বলল, “তোমার এই অবস্থার জন্য আমি দুঃখিত। তোমার এটা পুরোপুরি ঠিক হবে না। যখনি তুমি রেগে যাবে, তখনি তুমি নেকড়ে তে পরিণত হবে।“
ডেভিড বলল, “আমি সাদিয়ার সামনে কখনো রাগবো না। এখন তুমি এখান থেকে আমাকে সাদিয়ার কাছে নিয়ে যাও।”
ইসাবেলা তার জাদু লাঠি দিয়ে এক নিমেষেই ডেভিড কে সাদিয়ার বাড়ির সামনে পাঠিয়ে দিল।
ডেভিড দেখলো বাড়িতে অনুষ্ঠান হচ্ছে। সে ভেতরে গিয়ে দেখলো সাদিয়া আর রবিনের বিয়ে হচ্ছে। সাদিয়া ডেভিড কে দেখে বলল,”তুমি!”
ডেভিড বলল, “তুমি আমার সাথে প্রতারণা করেছো। এখন রবিনকে বিয়ে করছো কেন?”
তুমি তো আসবে বলে আজ তিন বছর নিখোঁজ ছিলে। আমরা ভেবেছি তুমি মারা গিয়েছো।
সে হতবাক হয়ে গেল। তিনটা বছর পেরিয়ে গেছে। আর তার কাছে মনে হয়েছে কয়েকদিন।
ডেভিড বলল, “এখন তো আমি ফিরে এসেছি।”
সাদিয়া বলল, “তা হয় না। আমাদের বিয়ের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। তুমি এখান থেকে চলে যাও।”
ডেভিডের রাগ হলো। সে হঠাৎ নেকড়ে তে পরিণত হলো। রবিনের দিকে এগিয়ে আসলো। কিন্তু সাদিয়া বাঁধা দিল। বলল, ” থাম, ও এখন আমার স্বামী। আমাকে আগে মেরে তারপর ওকে মেরো।”
ডেভিডের মন খারাপ হলো। সে এতোদিন ধরে সাদিয়াকে ভালোবেসেছে। আর সাদিয়া এখন ওকে চলে যেতে বলছে। সে সেখান থেকে গর্জন করতে করতে বের হয়ে গেল।
তারপর গেল ইসাবেলার কাছে। ওকে সব কিছু বলল। ওর মন খারাপ হলো। তার জন্যই ডেভিডের আজ এই অবস্থা। ডেভিড ইসাবেলা কে বিয়ের প্রস্তাব দিল। ইসাবেলা রাজি হয়ে গেল। ওরা সেখানেই সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলো।